কুমারখালী প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় পদ্মা নদীতে জেলেদের হামলায় নিখোঁজ আরেক সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল হোসেনের (৪০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকালে পাবনার সুজানগর উপজেলার নাজিরগঞ্জ এলাকায় পদ্মা নদীতে থেকে ভাসমান মরদেহটি উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। গত মঙ্গলবার বিকেলে কুমারখালীর শিলাইদহ খেয়া ঘাট এলাকা থেকে অপর সহকারী উপপরিদর্শক সদরুল হাসানের (৪০) ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। গত সোমবার ভোরে কুমারখালীর শ্রীখোল এলাকার জেলেদের হামলায় নৌকা থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে পুলিশের দুই কর্মকর্তা নিখোঁজ হন। এছাড়াও এ ঘটনায় এক উপপরিদর্শক ও দুই ইউপি সদস্য আহত হন। এতথ্য নিশ্চিত করেছেন কুমারখালী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সাব অফিসার ফিরোজ আহমেদ। তিনি বলেন, পদ্মায় নিখোঁজ পুলিশের দুই সহকারী উপপরিদর্শকের মরদেহ উদ্ধার হওয়ায় অভিযান স্থগিত করা হয়েছে। এদিকে কর্তব্যরত অবস্থায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে হত্যার অভিযোগে কুমারখালী থানায় একটি মামলা হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাত পৌনে নয়টায় কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ২০-২৫ জনকে। তবে জেলেদের ভাষ্য, আইন অমান্য করে নদীতে ইলিশ মাছ ধরছিল জেলেরা। সেময় অভিযানের নাম করে ৬ পুলিশ ও দুই মেম্বর তাদের কাছ থেকে মাছ ও তেল ছিনিয়ে নিলে এ হামলার ঘটনা ঘটে। অপরদিকে পুলিশ কর্মকর্তা সদরুল হাসানের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত করা হয়। পরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর শেষে মরদেহ কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনসে নেওয়া হয়।
ময়নাতদন্ত করা বোর্ডের এক চিকিৎসক বলেন, ‘সদরুল আলমের মাথায় শক্ত কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। যেটা দেখে মনে হয়েছে “বড়” আঘাত। এ কারণে প্রচুর রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।’
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘থানায় হত্যা মামলা রুজু হয়েছে। কয়েকজন আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম পরিচয় এখনই প্রকাশ করা হচ্ছেনা। ঘটনার গভীর তদন্ত চলছে।’ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম, অপারেশন ও মিডিয়া) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, কর্তব্যরত অবস্থায় পুলিশ কর্মকর্তা সদরুল আলমের মৃত্যু হয়েছে। যথাযথ সম্মান জানিয়ে লাশ পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। দাফনের আগে পাবনা জেলা পুলিশ থেকেও সম্মান জানানো হবে। তিনি আরও বলেন, নিহত পুলিশ কর্মকর্তা মুকুল হোসেনের লাশ পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হচ্ছে। সেখানে তার ময়নাতদন্ত করা হবে।