নিজ সংবাদ ॥ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে কুষ্টিয়া খাজানগর মোকমে সব ধরনের চালে প্রতি কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন মিল মালিকরা। হঠাৎ করে কোন কারন ছাড়াই মিলগেটে চালের দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় চটেছেন জেলা প্রশাসক। তিনি দাম না কমালে প্রয়োজনে মিল সিলগালা করে দেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন। ইতিমধ্যে বাড়তি দামে চাল বিক্রি করায় সরকার সমর্থক এক মিল মালিকসহ দুই প্রতিষ্ঠানকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। দুই প্রতিষ্ঠান হলো জিন্নাহ আলমের মালিকানাধীন সুবর্না এগ্রো ফুড ও সাহেব আলীর মালিকাধীন কুষ্টিয়া রাইস মিল। গতকাল বিকেলে অভিযান চালিয়ে তাদের জরিমানা করেন জেলা প্রশাসনের ম্যাজিষ্ট্রেট ও খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। জানা গেছে, দেশে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন ও অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে খাজানগর মোকামে সব ধরনের চালে প্রতিকেজিতে বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা। খাদ্য অধিদপ্তর সুত্র জানিয়েছে, হঠাৎ করে নতুন করে ফের খাজানগর মোকামে চালের কেজি ২ থেকে ৩ টাকা বেড়ে গেছে। কয়েকজন মিল আরো বেশি দামে বিক্রি করছেন চাল। গতকাল খাজানগর মোকামে অভিযান পরিচালনা কালে দেখা যায় সুবর্না এগ্রো ফুডে সরু চাল প্রতিকেজি ৬৭ টাকা বিক্রি করছে। একই দামে বিক্রি করছে কুষ্টিয়া রাইস মিল। কয়েকদিন আগে সরু চাল মিলগেটে বিক্রি হয়েছে ৬৫ টাকায়। হঠাৎ করে দুই টাকা দাম বাড়ার বিষয়টি অস্বাভাবিক বলে মনে করছে জেলা প্রশাসন ও খাদ্য বিভাগ। তাই এ দুই প্রতিষ্ঠানকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। মিল মালিকদের সাথে কথা হলে দাবি করে বলেন,‘ ধানের দাম প্রতি মণে বেড়েছে ২০০ টাকা। তাই চালের দাম বেড়েছে। তবে অন্য মিলের তুলনায় যে দুই প্রতিষ্ঠানে জরিমানা হয়েছে তারা ২ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছিলেন। এসব কারনে জরিমানা করা হয়েছে। সরু চালের পাশাপাশি আঠাশ ও কাজললতা চালের দাম ২ টাকার বেশি বেড়েছে। যে কাজললতা চাল ৫৬ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল সেই চালের কেজি এখন ৬০ টাকা টাকা আর আঠাশ ৫৩ টাকা বেড়ে এখন প্রায় ৫৫ টাকায় বিক্রি করছে কোন কোন মিল মালিক। জেলা চালকল মালিক সমিতির (একাংশ) সভাপতি ওমর ফারুক বলেন,‘ কোন মিল মালিক ইচ্ছা করে দাম বাড়াচ্ছে না। ধানের দাম বেড়েছে তাই চালের দাম সমন্বয় করা হচ্ছে। তবে কোন কোন মিল মালিক বাজার পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে একটু বেশি দামে বিক্রি করছে। তাদের এসব বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। আশা করছি কেউ বেশি দাম নেবে না।’ আর জেলা প্রশাসক মো: এহেতেশাম রেজা বলেন,‘ অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে কোন কোন চালকল মালিক চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমাদের দৃষ্টি যখন একটু অন্য দিকে রয়েছে সেই সুযোগে মিল মালিকরা চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন। বিষয়টি খুবই সিরিয়াস ভাবে দেখা হচ্ছে। জরিমানা করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত অভিযান চলবে। প্রয়োজনে অনিয়ম পেলে মিল সিলগালা করে দেওয়া হবে।’